নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম শিগগির কমবে: সালেহউদ্দিন

 

টানা বৃষ্টির অজুহাতে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে ফার্মের ডিমের দাম। খুচরায় ডজনপ্রতি ডিম ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে রপ্তানি শুরু হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বাজারে বেগুনের দাম কিছুটা বাড়লেও অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় মাছ ও মুরগির বাজারে বৃষ্টি ও বন্যার প্রভাব গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পড়েনি। ফলে আগের দামেই তা কিনতে পেরেছেন ক্রেতারা।বিক্রেতারা বলছেন, বন্যা ও অতিবৃষ্টির প্রভাব এখনো বাজারে তেমনভাবে না পড়লেও শিগগির এর প্রভাব দেখা যাবে। কারণ টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণে বিভিন্ন এলাকায় সবজিক্ষেতে পানি উঠে গেছে।

বন্যার পানিতে বিভিন্ন এলাকার মাছ চাষিদের পুকুরের মাছও ভেসে গেছে।গতকাল রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, মহাখালী কাঁচাবাজার ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি খুবই কম ছিল। কিন্তু বাজারে সবজিসহ সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত দেখা গেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি কেজি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মুরগির দাম গত দুই সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল। এক মাস আগে রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি কেজি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায় কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের। এখন মুরগির দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নাগালের বাইরে চলে গেছে ডিমের দাম। দাম বেড়ে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।মহাখালী কাঁচাবাজারে পাইকারি ডিমের বিক্রেতা মো. রাজিব মিয়া রাজু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকা থেকে ঠিকমতো ডিমের গাড়ি আসতে পারছে না।

যার কারণে রাজধানীর বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। সরবরাহ ঠিক হয়ে গেলে আবার দাম কমে আসবে।’পেঁয়াজের দামবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান, চীন, থাইল্যান্ড ও মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এর প্রভাবে বাজারে কমতে শুরু হয়েছে দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজ কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের চড়া দামেই রসুন বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন কেজি ২২০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জোয়ারসাহারা বাজারের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা মেসার্স ভাই ভাই স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে ডিম ও পেঁয়াজের দামে পরিবর্তন হয়েছে। এ ছাড়া অন্য সব নিত্যপণ্যের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। সবই আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।’

বেশির ভাগ সবজি ৫০-৬০ টাকায় মিলছে

রাজধানীর খুচরা বাজারে বেগুন, করলা ও টমেটো ছাড়া বেশির ভাগ সবজিই ক্রেতারা ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে কিনতে পারছেন। ঢেঁড়স কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, চালকুমড়া প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, কচুর মুখী ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন মানভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, টমেটো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং প্রতিটি লম্বা লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জানতে চাইলে বাড্ডা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মাহাদী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এক সপ্তাহের ব্যবধানে অনেক সবজির দাম কমেছে। বৃষ্টি হলেও সবজির সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। তবে আরো দুই-তিন দিন টানা বৃষ্টি থাকলে পণ্যের সরবরাহ কমে দাম বেড়ে যেতে পারে। কারণ বৃষ্টির মধ্যে কৃষকরা তাঁদের ক্ষেত থেকে সবজি তুলতে পারেন না। তখন হয়তো বাজারে এর কিছুটা প্রভাব পড়বে।’

সর্বশেষ