ভৈরবে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, পদত্যাগ দাবি শিক্ষার্থীদের

এম আর ওয়াসিম ,ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রধান কমলাপুর হাজী জহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগেরর প্রেক্ষিতে উক্ত স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক অহিদুর রহমান অহিদ এর পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানব বন্ধন করে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন এর কার্যালয়ের সামানে।

আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে পৌর শহরের কমলপুর হাজী জহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অহিদুর রহমান অহিদ কে পদত্যাগের দাবিতে বিদ্যালয়
প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা ।শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একত্রিত হয়ে বিদ্যালয়ের প্রাক্তনে শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে অংশগ্রহন করেন।পরে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিস ঘেরাও করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন- প্রধান শিক্ষক ব্যাপক দুর্নীতি করছেন।তিনি দুর্নীতিবাজ, তাকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এসময় প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে নানাও স্লোগানও দেন তারা।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দফা এক, দাবী এক প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ, দূর্নীতিবাজদের পদত্যাগ চাই, প্রধান শিক্ষক অহিদুর রহমান অহিদ এর পদত্যাগ চাই।সভাপতি লোকমান ও প্রধান শিক্ষকের বিগত দিনের দূর্নীতির হিসাব চাই। । দূর্নীতি মুক্ত কমলপুর হাজী জহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় চাই।স্কুল শিক্ষকদের কোচিং বানিজ্য বন্ধ চাই।দূর্নীতিবাজ, চরিত্রহীন, লম্পট, শুশুর বাড়ীর কোটা নিয়োগ, স্কুল কোচিং বাণিজ্য বন্ধ চাই।চরিত্রহীন লম্পট শিক্ষকরে পদত্যাগ চাই।চোর-বাটপারদের স্কুলে ঠাঁই নাই। শিক্ষার নামে ব্যবসা বন্ধ চাইসহ নানা অভিযোগের কথা ব্যানারে লিখেছেন শিক্ষার্থীরা।

 

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন বলেন, হাজী জহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য কয়েক জন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ পেয়েছি আমরা। অভিযোগের ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের স্টুডেন্টদের সাথে কথা হয়েছে।তারা যদি আমাদের কে লিখিত অভিযোগ দেই অবশ্যই আমরা সেই অভিযোগ গ্রহণ করব এবং তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

অভিযোগ দেওয়ার কথা বলার পরে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সচেতন এলাকাবাসী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,২০২০ সাল থেকে বিশেষ ক্লাস করার নামে প্রতি মাসে ৬৫,০০০/- (পয়ষটি হাজার) থেকে ৯৫,০০০/ (পঁচানব্বই হাজার) টাকা আত্মসাথোর নামে প্রতি মাসে ৬৭ শিক্ষককে প্রতি মাসে ৪০০০/- (চার হাজার)টাকা করে দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করে।এমপিওভুক্ত সহকারী শিক্ষক তামান্না কোন মার্চ/২০২৪-জুলাই/২০২৪ মাস পর্যন্ত আমেরিকা অবস্থান। করলেও তার ০৫ মাসের বেতন উত্তোলন করে প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করেছেন। ২০১৪ থেকে গাইড বই পাঠ্য করার জন্য বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে প্রায় ৬০,০০,০০০/- (ঘাট লক্ষ) টাকা
আত্মসাৎ করেন। করোনাকালীন সময়ের পর থেকে বিদ্যালয়ে ক্যান্টিন বন্ধ থাকার পরেও ক্যান্টিন নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় বাবদ ভাউচার করেন। মার্চ মাসে ২৬,৩৭০/- টাকার ভুতুড়ে বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেন। ৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের ট্রেনিং বাবদ ভুয়া ভাউচার এর মাধ্যমে ০১/০৪/২০২৪ তারিখে ৫০০০/- টাকা
আত্মত্মসাৎ করে। ৩০/০৪/২০২৪ ভাউচার নং ৫২ ঢাকা যাতায়াত বিএমআইএস একাদশ শ্রেণির নামে ১,০০,০৬০/-টাকা আত্মসাৎ করে। কলেজের নামে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন বাবদ ৩০/০৫/২০২৪ তারিখে ৩০,৬০০/- টাকার ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ করে। ভাউচার নং ১২১, ৩১/০৫/২০২৪ তারিখে এসএসসি ডিউটি ভাতা বাবদ ৬০,০০০/-টাকার খরচ
দেখানো হয়। ৩য় তলা ভবনের সিঁড়ি নির্মাণ বাবদ ৬২,০০০/- টাকা আত্মসাৎ করেন। ২৫/০২/২০২৪ তারিখে একাদশ শ্রেণির পাঠদানের অনুমতি ফি বাবদ ১,০০,০৬০/- টাকা আত্মসাৎ করে। ভাউচার নং- ৬৯: ১৬/০২/২০২৪ তারিখে একাদশ শ্রেণির অনুমতি ফি বাবদ ১,০০,০০০/- টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০/১২/২০২৩ তারিখে একাদশ শ্রেণির অনুমতি ফি বাবদ ১,০০,০০০/- টাকা আত্মসাৎ করেন। প্রতি বছর ফরম ফিলাপের অতিরিক্ত টাকা হগ্রহণ। সরকারি নিয়ম অনুসারে ১। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার জন্য ২১১০/- টাকা, ২। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ২২১০/- টাকা হলেও স্কুল থেকে দাবি করা হয়ে থাকে ৫০০০/- টাকা করে। এছাড়াও ডিসএলাও গোপনে এলাও করে ১৫,০০০/- টাকার বিনিময়ে। প্রধান শিক্ষকের বাসায় কর্মরত আয়া অন্তনা, যার বেতন স্কুল থেকে নেওয়া হয়। ভাউচার ছাড়া অনুপস্থিত শিক্ষাধীদের থেকে প্রতিদিন বন্ধের জন্য ৫০ টাকা করে জরিমানা।প্রধান শিক্ষকের নামে বরাদ্ধকৃত বাসায় উক্ত স্কুলের সহকারী শিজত ইকবাল হোসেন থাকেন এবং ভাড়া প্রধান করেন প্রধান শিক্ষককে । যা নিয়ম বহির্ভূত। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে ভয় ভীতি প্রদান করাতের তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা না বলার।

সর্বশেষ