নোয়াখালীতে বন্যার্তদের মাঝে নগদ অর্থ  প্রদান

এ আর শাহীন, বিশেষ প্রতিনিধি:
গত ৩১ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার চালাকচর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিনিধি দল নোয়াখালীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের মাঝে নগদ অর্থ সহযোগিতা প্রদান করে।
নোয়াখালী সদরের পাশে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সোনাপুরের ধর্মপুর গ্রামে এবং কবিরহাটের ধানসিঁড়ি গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়দের মাঝে
নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। প্রতিনিধি দলের স্বেচ্ছাসেবকরা গ্রামের ভিতরে কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানিতে নেমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ টাকা প্রদানের মাধ্যমে সহযোগিতার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই কৃষিকাজের সাথে সম্পৃক্ত সাধারণ গ্রামবাসী, বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ এবং গর্ভবতী মহিলা ছিল।

এলাকাবাসী নগদ টাকার সহযোগিতা পেয়ে খুব খুশি, তাদের কাছে নাকি ওই টিমটিই সর্বপ্রথম টাকা নিয়ে যায়। পার্শ্ববর্তী অনেক এলাকায় ত্রাণ সহযোগিতা পেলেও তারা তেমন একটা সহযোগিতা পায়নি। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন,রাস্তা থেকে বুঝা যায় না ভেতরের গ্রামগুলো প্লাবিত আর সারা দেশের মানুষ জানে ফেনীতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ তাদের মধ্যকার একজন ৭০ বয়সের অধিক বয়সের মুরুব্বির ভাষ্যমতে, তার জীবনে তিনি এত পানি দেখেননি কখনো,এমনকি কখনো বন্যায় তাদের রাস্তাটিও পুরোপুরি ডুবেনি আগে।
স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতিনিধিরা জানায়, সহযোগিতা কর্মকাণ্ড শেষে নিজ এলাকায় ফেরার পর গ্রামবাসীদের মধ্য থেকে সহযোগিতার সময় সাথে থাকা তরুণরা একজন গর্ভবতী মহিলার বাচ্চা হওয়ার সংবাদ দেয়। খবরটিতে সবাই খুব খুশি হয়।
স্বেচ্ছাসেবীদের মতামতের ভিত্তিতে জানা হয়ে গেছে, বন্যায় তাদের সাধারণ জীবনযাত্রা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত, জমিগুলো কৃষিকাজের একেবারেই অনুপযোগী। যারা দিনমজুরের কাজ করতো তারা কাজে যেতে পারছে না, অধিকাংশ লোক রিক্সা এবং অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো, রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় তারাও কাজে বের হতে পারছে না। এতে করে তাদের চলতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী প্রতিনিধি দলটি প্রায় ২০০ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহযোগিতা বিতরণ করে।
স্থানীয় লোকের সাথে কথা বলে জানা গেছে ৫ আগস্ট এর পরে এলাকায় জনপ্রতিনিধি না থাকায় কর্তব্যরত লোকের অভাবেও তারা অসহায়, সরকারি কোন সংস্থা বা সেনাবাহিনীর সহযোগিতা ও সেখানে পৌঁছেনি। গ্রামের অধিক ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে তাদের গবাদি পশু এবং হাঁস-মুরগি সহ আশ্রয় নেয়।সেখানে তাদের কাছে নিয়মিত খাওয়াসহ অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে।

এদিকে, নোবিপ্রবি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বন্যার্তদের জন্য ৩১ টি ৫০০ টাকার খাম উপহার হিসেবে দিয়েছে নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার “চালাকচর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগন ” এর সেচ্ছাসেবী প্রতিনিধি দল।
বন্যার্তদের পাশে নোবিপ্রবিয়ান তাদের এই মহৎ কাজকে সাধুবাদ জানায়। এ বিষয়টি নোবীপ্রবিয়ান ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে জানানো হয়। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্যার্তদের সহযোগিতার দায়িত্বে থাকা ছাত্রদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, এই মুহূর্তে ত্রাণ থেকে নগদ অর্থ প্রদান ক্ষতিগ্রস্তদের বেশি কাজে আসবে। তারা খাবার সহযোগিতার পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাও দিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ থাকলেও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা বন্যার্তদের সহযোগিতায় নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের কাছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ত্রাণ সহযোগিতা নিয়ে অনেকেই যাচ্ছে।

সর্বশেষ