গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আ’লীগ নেতার স্ত্রীর মৃত্যু

করোনাভাইরাসের সময়ের মতোই ভিড়। এ ছাড়া জাপানেও একই অবস্থা দেখা যায়। দেশগুলোতে এই রোগ নিয়ে সতর্ক অবস্থানেও যেতে দেখা যাচ্ছে। তবে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়লেও এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কিংবা দেশগুলোর সরকার সতর্কতা জারি করেনি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের তথ্যে জানা যায়, চীনে এই রোগে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা। বিশেষ করে আগে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল, তারা নতুন এই ভাইরাসের আক্রমণে নাজুক অবস্থায় আছেন। এইচএমপিভি ভাইরাস নিয়ে বিশ্বের অন্য দেশগুলোকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য বলেছে চীন। তারা জানায়, এটি মৌসুমি অর্থাৎ শীতকালীন সংক্রমণ মাত্র। চীন, জাপান ও মালেশিয়ার পর ভারতেও শনাক্ত হলো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)। ৬ই জানুয়ারি দেশটির কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে দুটি শিশুর শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত হয়।

২০০১ সালে প্রথমবারের মতো এইচএমপিভির উপস্থিতি জানান দিলেও এখন পর্যন্ত এর টিকা আবিষ্কার হয়নি। চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা মোকাবিলায় যেসব সতর্কতা নেয়া হয়েছিল, একই পদক্ষেপে এই ভাইরাসও প্রতিরোধ করা সম্ভব। টানা ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়া, অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ স্পর্শ না করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার মধ্যদিয়ে এইচএমপিভি থেকে নিরাপদ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এইচএমপিভি কীভাবে ছড়াতে পারে: এইচএমপিভি অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসের মতো ছড়ায়। এটি সাধারণত সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সৃষ্ট বায়ুকণা থেকে ছড়ায়। এ ছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির জীবাণু হাঁচি-কাশির কারণে বা জীবাণুযুক্ত হাত দিয়ে স্পর্শ করলে অন্য কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। এইচএমপিভি আক্রান্ত কারও কাছে গিয়ে তার কাপড় বা ব্যবহার্য কোনো জিনিস ধরে নাকে-মুখে-চোখে হাত দিলে এইচএমপিভি শ্লেষ্মাঝিল্লি দিয়ে দেহে প্রবেশ করে। আক্রান্ত হওয়ার ২-১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়; গড়ে ৫ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা যায়।

এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে কারা: করোনাভাইরাসের মতো এই ভাইরাসেও সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা। বিশেষ করে আগে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল, তারা নতুন এই ভাইরাসের আক্রমণে নাজুক অবস্থায় আছেন। বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে আগেও এইচএমপিভি ভাইরাসের অস্তিত্ব ছিল। এখনো শিশু আর প্রবীণদের শরীরে মিলবে এটির অস্তিত্ব। তবে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। করোনার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই, সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

এইচএমপিভি’র টিকা নিয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা: ২০০১ সালে প্রথম আবিষ্কার হলেও এইচএমপিভি সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য কোনো টিকা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। এতে সংক্রমিত হলে চিকিৎসার জন্য ওষুধও নেই। এ পরিস্থিতি কি ভয়ের কারণ হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীতে লাখ লাখ এমন ভাইরাস রয়েছে, যার কোনো টিকা বা ওষুধ নেই। তাই বলে সেই ভাইরাসের সংক্রমণে মানুষ মারা যাচ্ছেন, এমন কিন্তু নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংক্রমণ নিজে থেকে সেরে যায়। পোলিও, মিসলসের মতো কিছু ভাইরাসের সংক্রমণে যথেষ্ট শারীরিক জটিলতা তৈরি হয়। তাই, এগুলোর টিকা আগে থেকে দেয়া হয়। নয়তো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিয়ম হলো সংক্রমণের বহর দেখে টিকা তৈরি করা। ব্যাপক অঞ্চল জুড়ে যদি ভাইরাস ছড়াতে শুরু করে, তখনই ওষুধ ও টিকা তৈরির কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন বিজ্ঞানীরা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. মুশতাক হোসেন বলেন, অধিকাংশ ভাইরাসেরই সরাসরি কোনো ওষুধ নেই। তবে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা রয়েছে; এটির ক্ষেত্রেও তাই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে কিনা, সে বিষয়ে চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।

সর্বশেষ